দেবব্রত মন্ডল ( বাঁকুড়া ) : একসময়ে এ বাংলায় চাষ বাস থেকে শুরু করে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম ছিল গরুর গাড়ি । বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিবাহ পর্ব সম্পন্ন করতেও গরুর গাড়ির প্রচলন ছিল যথেষ্ট । বাংলা সাহিত্যে শরৎচন্দ্রের গল্প উপন্যাস মানেই গরুর গাড়ির উপস্থিতি ছিল সবসময় । কিন্তু সময়ের পরিবর্তন হতে হতে অনেকটাই ব্রাত্য হয়েছিল সেই যান । কৃষি কাজেও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে গিয়ে গোরুর গাড়ির উপর ভরসা ছেড়ে দিয়েছিলেন চাষীরাও । ফসল কাটা , ফসল তোলা এমনকি বীজ রোপণেও এখন যন্ত্রের উপস্থিতি । তাই বড় অনাদরে বাড়ির বাঁশবাগানের কাছে , খামারে বড় অবহেলায় পড়ে ছিল গরুর গাড়ি এতদিন । বাজারে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম বাড়তেই আবার খোঁজ পড়েছে সেই গরুর গাড়ি গুলিকেই । ঝেড়ে সাফ করে এখন কৃষকরা মেরামতিতে হাত লাগিয়েছেন জোরকদমে । ডিজেলের দাম হু হু করে বাড়তেই ভরসা যোগাচ্ছে সেই গরুর গাড়ি ।
কথায় আছে "পুরনো চাল ভাতে বাড়ে " কিম্বা " যাকে করি হেলা সেই হয় পরে গলার মালা "। বহু চর্চিত এই প্রবাদ বাক্যই ফের সত্যি হতে চলেছে। গ্রাম বাংলার চাষীরা পেট্রোল ডিজেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জেরে ব্যায় বহুল বর্তমান প্রযুক্তি বিদ্যা ছেড়ে পুরাণো অভ্যাসে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। গরুর গাড়ি ছেড়ে ট্রাক্টর হারভেস্টার (?) ইত্যাদির ভরসায় ভালোই চলছিল চাষবাস , অল্প সময়ে উৎপাদিত দ্রব্য বাড়িতে আনা এবং শহরে পৌঁছে দেওয়া ভালোই চলছিল চাষীদের নিত্যদিনের কাজ কারবার |
কিন্তু হঠাৎই যেন ছন্দপতন। কারণ একটাই নোভেল করোনাভাইরাসের উপস্থিতির জেরে দীর্ঘ লকডাউন এর জেরে বিদেশ বাণিজ্য বন্ধ হওয়ায় প্রতিটা দ্রব্যেরই মূল্য বৃদ্ধি ঘটেছে , বাদ যায়নি পেট্রোল ডিজেলর মূল্যবৃদ্ধিও | যে কারণে চাষীরা আর ট্রাক্টর ব্যবহার করতে পারছেন না , বাধ্য হয়েই ফিরে তাকাতে হচ্ছে পুরনো দিনের সেই গরুর গাড়ির দিকে পাত্রসায়ের সোনামুখী ইন্দাস এর চাষীরা আবার গরুর গাড়ি মেরামতের কাজে লেগেছেন বর্ষার চাষের আগে শেষবারের মতো দেখে নিচ্ছেন গাড়িটি চলার মতো উপযোগী হয়ে উঠেছে কিনা |